গোর্কি বা সিডরের শক্তি নিয়ে বাংলাদেশে ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন আম্পান
১৯৭০ সালের ভোলার ভয়ংকর সাইক্লোন গোর্কি বা ২০০৭ সালের সিডরের শক্তি নিয়ে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন আম্পান। আগামীকাল বুধবার ভোরে এটি দেশের উপকূলে আঘাত হানবে এটা অনেকটা নিশ্চিত। এসময় ঢেউয়ের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-১০ ফুটের বেশি হতে পারে। এছাড়া বাতাসের গতিবেগ প্রতিঘণ্টায় হতে পারে ১৪০-১৬০ কিলোমিটার। সাথে প্রবল বৃষ্টি ও বজ্রপাতের আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
এদিকে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোহাম্মদ এনামুর রহমান আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে সচিবালয়ে আায়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জনিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের বর্তমান গতিবিধি অনুযায়ী আগামীকাল (বুধবার) সকাল ৬টায় মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা করা হবে।
ওদিকে খুলনা ও পার্শবর্তী জেলা থেকে বিকেল ৬টা নাগাদ প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাব শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও গুমোট গরমের মধ্যে দুপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বিকেল নাগাদ কিছুটা দমকা হাওয়া ও থেমে থেমে বৃষ্টি দেখা দিয়েছে।

এর আগে আজ (মঙ্গলবার) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জরুরি ব্রিফিংয়ে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আজ সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে৭২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অতিসম্প্রতি দেশে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়গুলোর তুলনায় বেশি শক্তিশালী মনে হচ্ছে আম্পানকে। শক্তি ও গতি-প্রকৃতি পর্যালোচনা করে সুপার সাইক্লোন আম্পানের শক্তি ২০০৭ সালে তাণ্ডব চালানো সিডরের মতো হতে পারে। এটি উপকূলে আঘাত হানলে হতে পারে ভয়াবহ ক্ষতি। তবে সুন্দরবন উপকূলে আঘাত হানলে লোকালয়ে ক্ষতি কম হবে বলেও ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদরা।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবশ্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুটের অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট,পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম জেলাসমূহ এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারীবর্ষণসহ ঘন্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্তর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।