করোনার নতুন স্ট্রেইনে লন্ডনের সঙ্গে সিলেটের বিমান চলাচলে উদ্বেগ: নিষেধাজ্ঞার দাবি
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i85684-করোনার_নতুন_স্ট্রেইনে_লন্ডনের_সঙ্গে_সিলেটের_বিমান_চলাচলে_উদ্বেগ_নিষেধাজ্ঞার_দাবি
যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের এবং অধিক সংক্রামক করোনা ভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেও লন্ডনের সঙ্গে সিলেটের বিমান চলাচল এখনো চালু থাকায় উদ্বিগ্ন সিলেটবাসী তথা দেশের সচেতন নাগরিকরা।
(last modified 2025-09-29T12:37:45+00:00 )
ডিসেম্বর ২৯, ২০২০ ১৮:৪৭ Asia/Dhaka

যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের এবং অধিক সংক্রামক করোনা ভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেও লন্ডনের সঙ্গে সিলেটের বিমান চলাচল এখনো চালু থাকায় উদ্বিগ্ন সিলেটবাসী তথা দেশের সচেতন নাগরিকরা।

যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়ায় লন্ডনে অবস্থানরত অনেক সিলেট প্রবাসীই দেশে আসতে শুরু করেছেন। তাছাড়া শীতকালে দেশে বেড়াতে আসেন অনেক পরিবার।

প্রতি সপ্তাহে লন্ডন থেকে দু’টি ফ্লাইট আসে সিলেটে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে,  প্রতি সপ্তাহে গড়ে বৃটেন থেকে সিলেটে  আসছেন ২৪০ থেকে ৩০০ জন যাত্রী।

গতকাল সোমবারও ও বাংলাদেশ বিমানের  একটি  ফ্লাইট লন্ডন থেকে ১৬৭ যাত্রী নিয়ে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যাত্রীদের ১৪৪ জনই সিলেটের।

এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট ২০২ জন যাত্রী নিয়ে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সে ফ্লাইটের ১৬৫ জন যাত্রীই সিলেটের। তাদের প্রত্যেকের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর বাড়ি যেতে দেয়া হয়েছে।

ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ জানান,গতকাল বিমানের ফ্লাইটে আসা নতুন ১৪৪ যাত্রী করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া এখন কাউকেই বিমানে উঠতে দেওয়া হয় না। আবার দেশে আসার পরও মেডিকেল টিম সব যাত্রীদের করোনা সনদ পরীক্ষা করে। ফলে করোনা নেগেটিভ সনদ ছাড়া কারোরই দেশে আসার সুযোগ নেই।’

বিমান  চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দাবি

করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনে উদ্বেগ বিশ্বজুড়ে(ফাইল ফটো)

এদিকে নতুন ধরনের এবং বেশি সংক্রামক করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। ভারতও যুক্তরাজ্য থেকে আসা বিমানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখনও সে রকম কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নি।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলের লন্ডন প্রবাসীরা দেশে আসায় আতঙ্ক ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তাছাড়া,যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান যাতায়াত চালু থাকায় সিলেটবাসীর দুর্ভাবনার শেষ নাই। তাই অনেকেই যুক্তরাজ্যের সাথে ফ্লাইট বন্ধ রাখার কথা বলেছেন।

সিলেটের সুশীল সমাজের অনেকেই বলেছেন,বিষয়টি নিয়ে অনেকের মধ্যে আতংক ও দুর্ভাবনা রয়েছে। সিলেটের আঞ্চলিক পত্রিকা দৈনিক জালালাবাদের সম্পাদক জনাব মুকতাবিস উন নূর রেডিও তেহরানকে বলেন,বর্তমান  স্বাস্থ্য ঝুঁকির  কথা বিবেচনা করে লন্ডনের সাথে বাংলাদেশের বিমান চলাচল বন্ধ রাখা জরুরি। তিনি  উল্লেখ করেন,সিলেটের প্রবাসীরা দু’চার সপ্তাহের জন্য বেড়াতে আসেন। তার মধ্যে যদি দু’সপ্তাহই কোয়ারেন্টাইনে কাটাতে হয় তাহলে তদের এসে লাভ কী। তাছাড়া, দেশে তাদের স্বজনদের নিরাপত্তার  কথা মনে রেখেও  তাদের এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় মনে করেন,করোনার নতুন স্ট্রেইনের সংক্রমণ ঠেকাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল আপাতত বন্ধ রাখা উচিত। কারণ বাংলাদেশে এটি ছড়িয়ে পড়লে সামাল দেয়া কঠিন হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের সব ফ্লাইট বিশেষ নজরদারিতে আছে। প্রয়োজনে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হবে। গত বৃহস্পতিবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা মহড়ায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী  এ কথা জানান।

১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক

১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক

এদিকে,লন্ডন থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নতুন বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে সোমবার (২৮ডিসেম্বর) রাতে ভিডিও কনফারেন্স শেষে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত হোটেলগুলোতে তারা নিজ খরচে থাকবেন। এদিকে,অন্যান্য দেশ থেকে আগত বিমানযাত্রীদের ক্ষেত্রে কোভিড সনদ আনার বাধ্যতামূলক যে ব্যবস্থা এখন চালু রয়েছে,তা বহাল থাকছে। প্রয়োজন হলে পরবর্তীতে এ বিষয়ে আরো বিশদ জানানো হবে বলেও জানান তথ্যসচিব।

তবে,সিলেটবাসী মনে করেন, এতো বিপুলসংখ্যক যাত্রীকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা সম্ভব নাও হতে পারে। আর যদি সেটি করাও হয় তবে সেখানে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা প্রবাসীদের দেশে থাকা স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা সম্ভব হবে না। আর প্রবাসীদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখাটা হতে পারে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/গাজী আবদুর রশীদ/২৯

  • বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।