জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হলে আইএইএ চুক্তি বাতিল হবে: ইরানের হুঁশিয়ারি
https://parstoday.ir/bn/news/event-i152160-জাতিসংঘের_নিষেধাজ্ঞা_পুনর্বহাল_হলে_আইএইএ_চুক্তি_বাতিল_হবে_ইরানের_হুঁশিয়ারি
ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল কিংবা কথিত ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ সক্রিয় হলে সম্প্রতি কায়রোতে ইরান ও আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে।
(last modified 2025-09-21T10:56:09+00:00 )
সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫ ১৯:২৩ Asia/Dhaka
  • ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি
    ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি

ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল কিংবা কথিত ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ সক্রিয় হলে সম্প্রতি কায়রোতে ইরান ও আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে।

ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি আইআরআইবি নিউজকে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইউরোপীয় ট্রয়িকা ও আইএইএ-র সঙ্গে ইরানের সর্বোচ্চ সহযোগিতা সত্ত্বেও ইউরোপ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলো পুনর্বহালের পদক্ষেপ নিয়েছে।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সাথে সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে তুলে নেওয়ার জন্য একটি খসড়া প্রস্তাবনা শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভোটে প্রত্যাখ্যান হয়েছে।

গারিবাবাদি বলেন, যদিও নিরাপত্তা পরিষদ রেজুলেশন ২২৩১ এবং যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা (জেসিপিওএ) চ্যালেঞ্জ করে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সম্প্রসারণের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় উদ্যোগটি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়।

নয় সদস্য প্রস্তাবটির বিপক্ষে ভোট দেন, আর রাশিয়া, চীন, পাকিস্তান ও আলজেরিয়া সমর্থন করে, দুই দেশ বিরত থাকে। এর ফলে, ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমঝোতা না হলে ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হবে।

তিনি বলেন, “আমরা, চীন ও রাশিয়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নিরাপত্তা পরিষদে অত্যন্ত বিস্তারিত ও আইনি যুক্তি উপস্থাপন করেছি। এ সময়ে আমরা স্পষ্ট করেছি যে ইউরোপের তিন দেশের স্ন্যাপব্যাক ব্যবস্থা সক্রিয় করার পদক্ষেপ সম্পূর্ণ অবৈধ।”

গারিবাবাদি আরও বলেন, ইরান সর্বদা কূটনীতি ও পারস্পরিক যোগাযোগে বিশ্বাসী, এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর পদক্ষেপ ঠেকাতে কূটনৈতিক পথে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি কূটনীতির ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ অগ্রগতি না ঘটে এবং জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হয়, তাহলে কায়রোতে আইএইএর সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি সম্পূর্ণরূপে বাতিল হয়ে যাবে—এটা হবে যৌক্তিক পরিণতি।”

গত ৯ সেপ্টেম্বর কায়রোতে বৈঠকের পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি ও আইএইএ মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি সহযোগিতা পুনরায় শুরুর জন্য বাস্তবসম্মত রূপরেখায় সমঝোতায় পৌঁছান।

এর আগে ইরানের পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে আইন পাস করে, যাতে বলা হয়-ইসরায়েল-আমেরিকার যৌথ আগ্রাসনে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়ায় এবং আন্তর্জাতিক আইন ও এনপিটি (পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি) স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন হওয়ায় সরকারকে আইএইএ'র সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিত করতে হবে।

সাক্ষাৎকারে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী গারিবাবাদি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞাগুলো অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে; তবে এগুলো ইরানের বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা কাঠামোয় নতুন কিছু যোগ করবে না।

তিনি সতর্ক করে দেন, “আমাদের খুব সাবধান থাকতে হবে যাতে আমরা পশ্চিমা দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মনস্তাত্ত্বিক অভিযানের ফাঁদে না পড়ি।”

সাম্প্রতিক ঘটনাবলিতে ইরানের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে গারিবাবাদি নিশ্চিত করেন যে, আইএইএর সঙ্গে চুক্তি স্থগিত করার বাইরেও অতিরিক্ত পদক্ষেপ এখন উচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারণী ফোরামে বিবেচনাধীন রয়েছে এবং যথাসময়ে তা ঘোষণা করা হবে।

তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যোগাযোগ ও কূটনীতির পথ কখনও বন্ধ হয় না” এবং সংকট বা সংঘাতের মাঝেও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সংলাপ ও কূটনৈতিক যোগাযোগ আগামী দিনগুলোতে অব্যাহত থাকবে।#

পার্সটুডে/এমএআর/২০