ইরানের সংস্কৃতি ও প্রথাগুলো মানবীয় মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেয় ও এর বিকাশ ঘটায়
ইরানের সমাজ-ব্যবস্থা ও সংস্কৃতির ওপর কেন মহাক্ষুব্ধ ব্রিটিশ ও মার্কিন সরকার?
সম্প্রতি ব্রিটেন ইরানের ১৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অজুহাতে এইসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ব্রিটেন।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি এ সম্পর্কে বলেছেন, ইরানের এই ১৩ ব্যক্তি দেশটির কেন্দ্রীয় বিপ্লবী সাংস্কৃতিক পরিষদের সদস্য। তারা ইরানের জনগণের ওপর নিপীড়নমূলক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আইন চাপিয়ে দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেছেন।
অথচ বাস্তবতা হল এই পরিষদ ইরানের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আলোকে ইসলামী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব পালন করছে। ব্রিটেনের এই পদক্ষেপকে ইরান অত্যন্ত ধৃষ্টতাপূর্ণ ও মোড়লীপনাসুলভ এবং তার সার্বভৌমত্বের প্রতি অবমাননাকর বলে মনে করছে। ব্রিটেন কি ইসলামী ইরানকে তার অঙ্গরাজ্য বলে মনে করে? ক্লেভার সাহেব নিজেকে যতই ক্লেভার বা চতুর মনে করুন না কেন ইরানের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা আর প্রথাগুলোর বিরুদ্ধে তার যুদ্ধ ঘোষণা বেশ লজ্জাজনক ও নির্বুদ্ধিতাপূর্ণ।
ব্রিটেন যদি নিজেকে বিশ্বের সংস্কৃতি ও বিধি-বিধানের সংরক্ষক বলে মনে করে তবে দেশটি মারাত্মক ভুল করছে। বিশ্বের কোনো দেশই জাতিগুলোর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের সঠিক ও ভুল সীমারেখা নির্ধারণের দায়িত্ব ব্রিটেনকে দেয়নি। তাই ব্রিটেনের কোনো ব্যক্তি বা সরকারের আধিপত্যের বিরোধী হলেই তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়া স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতা মাত্র। ইরানের জনগণের পছন্দের সংস্কৃতি ও প্রথাকে মানব সভ্যতার গৌরব বলে উল্লেখ করা যায়।
ইরানের সংস্কৃতি ও প্রথাগুলো মানবীয় মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেয় ও এর বিকাশ ঘটায়। এই মূল্যবোধ অনুযায়ী মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি। তাই তারা মানুষের ওপর আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো প্রভুত্ব মানেন না এবং আল্লাহর প্রতি ঈমানের আলোকে তারা পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদ ও শয়তানি প্রভুত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছেন।
ব্রিটেন ও মার্কিন সরকার ইরানের প্রথা ও সংস্কৃতির ওপর এ জন্যই ক্ষেপে আছে যে এইসব সংস্কৃতি ও প্রথা পশ্চিমা সংস্কৃতির বিষাক্ত ভাইরাসের মোকাবেলায় মানবীয় সুরক্ষার কাজ করছে। পশ্চিমা সংস্কৃতি নামক ভাইরাস বিশ্বে সমকামিতা ছড়িয়ে দিতে চায় যা মানব প্রজন্মকে নির্মূল করার এক ষড়যন্ত্র। ইরানিদের সভ্যতা ও সংস্কৃতি কেবল পশ্চিমা আগ্রাসন ও জুলুমগুলোর মোকাবেলায় জনগণকে নিরাপদ রাখছে তা নয় একইসঙ্গে তাদেরকে শক্তিশালী, সাহসী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন করছে। আর এ কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য ইরানের মানবিক এবং আধ্যাত্মিক সভ্যতা ও সংস্কৃতির ওপর ভীষণ ক্ষিপ্ত। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।