জেনেভায় সিরিয়া বিষয়ক আলোচনা চলছে: সফলতা নিয়ে বাড়ছে সংশয়

সিরিয়া বিষয়ক পঞ্চম বৈঠক গতকাল থেকে জেনেভায় শুরু হয়েছে এবং আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত চলবে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই এবারের বৈঠকে অংশ নিয়েছে। এর আগে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের উপস্থিতি ছাড়াই কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সিরিয়ার রাজনৈতিক কাঠামো নির্ধারণ, সংবিধান সংস্কার, নির্বাচন এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের বিষয়টি মূলত জেনেভা বৈঠকে প্রাধান্য পাবে।

রাজনৈতিক উপায়ে সিরিয়া সমস্যা সমাধানের জন্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আস্তানা ও জেনেভায় ধারাবাহিকভাবে এসব বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ অঞ্চলের জনগণও সিরিয়া সংকটের নেতিবাচক প্রভাবে উদ্বিগ্ন এবং এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বৈঠকের ফলাফলের দিকে তারা তাকিয়ে আছে। সবাই আশা করছে ভালো ফলাফল বেরিয়ে আসবে। সিরিয়া সংকট সমাধানে ইরান ও রাশিয়া কূটনৈতিক উদ্যোগ নেয়ার পরই সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সবার মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। কারণ এর আগে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সিরিয়ায় বিবদমান সব পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু সিরিয়ার সরকার বিরোধী কোনো কোনো বিদ্রোহী গ্রুপ ও তাদের সমর্থক দেশগুলো নানাভাবে সংলাপ ও সমঝোতাকে বানচাল করে দেয়ার চেষ্টা করছে।

কিছুদিন আগে কাজাখস্তানে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের অনুপস্থিতিতে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং বৈঠক চলার একই সময়ে পাশ্চাত্য ও রাজতান্ত্রিক আরব সরকারগুলোর সবুজ সংকেতে সন্ত্রাসীরা ফের প্রচণ্ড হামলা চালানো শুরু করে যাতে সিরিয়া সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেয়া যায়।

এই ষড়যন্ত্রের প্রতিক্রিয়ায় সিরিয়া সরকার জাতিসংঘ মহাসচিব ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রধানের কাছে লেখা আলাদা আলাদা চিঠিতে অভিযোগ করেছে, জেনেভা শান্তি আলোচনা ব্যর্থ করে দেয়ার চেষ্টা করছে সন্ত্রাসীরা ও তাদের সমর্থক দেশগুলো। গত কয়েকদিনে আলেপ্পো ও রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে  বড় ধরণের সন্ত্রাসী হামলা ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ২০১১ সাল থেকে আমেরিকা, সৌদি আরব ও তুরস্কের সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসীরা সিরিয়ার বৈধ সরকারকে উৎখাতের জন্য হামলা চালানো শুরু করে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, জেনেভা আলোচনায় উপস্থিত পক্ষগুলোর মধ্যে এখনো মতবিরোধ বিরাজ করায় সিরিয়া সমস্যা সমাধানে তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে হয় না। কারণ আমেরিকা, তুরস্কসহ অন্য আরব দেশ ও সিরিয়ার বিদ্রোহীরা মনে করে সিরিয়ায় সংঘাত জিইয়ে রাখলে তাদের স্বার্থ রক্ষা পাবে।   

গত কয়েক মাসে ইরান ও রাশিয়ার কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় সিরিয়ায় সংকট কমে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সন্ত্রাসী ও তাদের সমর্থক দেশগুলোর অব্যাহত ষড়যন্ত্রের কারণে শান্তির সম্ভাবনা বিনষ্ট হচ্ছে। তাই এবারের আলোচনায় আশা ব্যঞ্জক ফলাফল আসবে না বলেই অনেকের ধারণা। #

পার্সটুডে/মো. রেজওয়ান হোসেন/২৪