‘বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দাবি মিথ্যা প্রমাণিত’
কিশোর হত্যা: ফরাসি পুলিশের বর্বরতার তীব্র নিন্দা জানাল সিরিয়া
আলজেরীয় বংশোদ্ভূত একজন ফরাসি কিশোরকে গুলি করে হত্যা করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সিরিয়া। দামেস্ক বলেছে, ফ্রান্স সরকার সমতা রক্ষা ও বর্ণ-বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার যে দাবি করে এই ঘটনায় তার অসারতা ন্যক্কারজনকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
গত ২৭ জুন ১৭ বছর বয়সি কিশোর নাহেলকে ফরাসি পুলিশ গুলি করে হত্যা করে এবং এরপর থেকে গত পাঁচদিন ধরে জনগণের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে রয়েছে ফ্রান্স।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল (শনিবার) এক বিবৃতিতে বলেছে, ফরাসি পুলিশ ‘অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায়’ ১৭ বছর বয়সি কিশোর নাহেলকে কাছে থেকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ফ্রান্স সরকার দেশটিতে বসবাসরত ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নাগরিকদের সঙ্গে যে চরম বর্ণবাদী আচরণ করে তার অবসান ঘটাতে হবে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, “পুলিশের হাতে কিশোর হত্যার ঘটনায় ফরাসি পুলিশের বর্ণবাদী ও উপনিবেশবাদী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।”
এদিকে, পুলিশের গুলিতে নাহেলের মৃত্যুর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ফ্রান্স। এরই মধ্যে দাঙ্গা ও সহিংসতায় রূপ নিয়েছে এই প্রতিবাদ। দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে প্রায় এক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে ফরাসি পুলিশ। দাঙ্গা ও সহিংসতায় এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৫৬০টি জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এক হাজার ৩৫০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়া, ২৩৪টি ভবনে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তারা আরো বলছে, শুক্রবার রাতে ৭৯ জন পুলিশ আহত হয়েছে।৫৮টি থানায় হামলা হয়েছে।
ফ্রান্সে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত মঙ্গলবার থেকে। ওই দিন সকালে প্যারিসের উপশহর নানতেরে ট্রাফিক বিধি অমান্য করে জোরে গাড়ি চালানোর অভিযোগে নাহেল এম নামের ১৭ বছর বয়সী এক তরুণকে গাড়ি থামানোর নির্দেশ দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু নাহেল তাতে কর্ণপাত না করে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ সদস্যরা।এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নাহেলের।
নাহেলের পরিবারের সদস্যরা আলজেরিয়া থেকে গিয়ে ফ্রান্সে স্থায়ী হয়েছেন। তাদের আর্থিক অবস্থাও খুব ভালো নয়। প্যারিসের নানতের উপশহরটি মূলত দরিদ্র অধ্যুষিত এলাকা। সেখানেই মায়ের সঙ্গে থাকত নাহেল।#
পার্সটুডে/এমএমআই/২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।