ইউরোপ ত্রিমুখী সংকটে জর্জরিত: দারিদ্র্য, যুদ্ধ এবং পরিবেশগত অবক্ষয়
-
ইউরোপ ত্রিমুখী সংকটে জর্জরিত: দারিদ্র্য, যুদ্ধ এবং পরিবেশগত অবক্ষয়
পার্সটুডে-ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান অফিস "ইউরোস্ট্যাট" ইউরোপে বস্তুগত এবং সামাজিক তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে।
বস্তুগত এবং সামাজিক বঞ্চনা বলতে দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক প্রয়োজনীয় এবং অপরিহার্য বলে বিবেচিত পণ্যসামগ্রী বা পরিষেবা পেতে অক্ষমতা।
ইউরোনিউজের উদ্ধৃতি দিয়ে পার্সটুডে আরও জানিয়েছে, ইউরোস্ট্যাটের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় ২৭.৫ মিলিয়ন নাগরিক তীব্র বস্তুগত বা সামাজিক বঞ্চনার মধ্যে বসবাস করে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কিছু অঞ্চলে, বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপে, জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশেরও বেশি জনগণ মৌলিক পণ্য কিনতে পারে না।
পরিসংখ্যান অনুসারে, পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোতে বঞ্চনার হার সর্বাধিক দেখা যায়। রোমানিয়া ১৭.২ শতাংশ নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে; এর অর্থ হল দেশের জনসংখ্যার প্রায় এক পঞ্চমাংশ মানুষ মৌলিক চাহিদা পূরণে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
বুলগেরিয়া ১৬.৫% শতাংশ নিয়ে এবং গ্রীস ১৪% শতাংশ নিয়ে এর পরে রয়েছে। গত বছর ইইউতে এই তিন দেশেই বঞ্চনার হার সবচেয়ে বেশি ছিল।
এদিকে, ইউরোপীয় পরিবেশ সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছে যে পরিবেশগত অবক্ষয় মহাদেশের জীবনযাত্রা এবং অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেলছে। বন্যপ্রাণীর বৈচিত্র্য হ্রাস, জলের ঘাটতি বৃদ্ধি এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন খুব ধীরে ধীরে হ্রাস পাওয়ায়, ইউরোপীয়দের সুস্থতা এবং প্রতিযোগিতার ভবিষ্যত গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, ইউরোপের ৮০% শতাংশরেও বেশি সংরক্ষিত আবাসস্থল খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে, যার মূল কারণ উৎপাদন ও ব্যবহারের স্থির কোনো আদর্শের অভাব। গত দশকে ইইউর কার্বন শোষণ ক্ষমতা প্রায় ৩০% শতাংশ কমে গেছে, যার কারণ হলো বন উজাড় হয়ে যাওয়া, আগুন লাগা এবং কীটপতঙ্গ ইত্যাদি।
২০০৫ সাল থেকে পরিবহন এবং খাদ্য খাত থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে, জলের ঘাটতি ইতিমধ্যেই ইউরোপের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশকে প্রভাবিত করেছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। ইউরোপীয় পরিবেশ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বলেছেন: ইউরোপ তার ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রার দিকে যথেষ্ট অগ্রগতি করছে না। সুতরাং মহাদেশের ভবিষ্যত জীবনযাত্রার মান এবং অর্থনীতি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
ইউরোপের অতি-ডানপন্থী দলগুলো, যারা জলবায়ু পরিবর্তনকে অস্বীকার করে, তারা ক্ষমতায় আসার পর এই সতর্কবার্তাটি এলো যা মহাদেশের কিছু সবুজ নীতিকে দুর্বল করে দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ইউরোপকে আমেরিকার জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে এবং তার জন্য পরিবেশগত নীতিমালা শিথিল করার জন্য চাপ দিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে ইউরোপ এমন একটি পথে চলছে যা যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এই বিষয়ে, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান সোমবার বলেছেন: "ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউরোপীয় মহাদেশকে যুদ্ধ প্রকল্পে পরিণত করেছে।" তারা শান্তির কথা বলে কিন্তু যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকে এবং সমস্ত জাতিকে তাদের এজেন্ডায় বাধ্য করার চেষ্টা করে।#
পার্সটুডে/এনএম/১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।