জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে জামায়াত নেতাদের সাক্ষাৎ
সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের আয়োজন ত্রুটিপূর্ণ হবে: ডা. তাহের
-
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের
বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের নির্বাচনী চাহিদা মূল্যায়ন মিশনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। আজ (সোমবার) দুপুরে ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক কার্যালয়ে এই সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদল জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না। জবাবে দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, ‘আমরা বলেছি, কোনো দলের পক্ষে-বিপক্ষে আইনগত কোনো বিষয় নিয়ে আমরা কোনো মতামত দিচ্ছি না। এটা পিপলস উইল ডিসাইড, সোসাইটি উইল ডিসাইড, সিচুয়েশন উইল ডিসাইড।’
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এ কথা বলেন।
জাতিসংঘ প্রতিনিধি দল জাতীয় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দলের নীতিগত সিদ্ধান্ত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। সেটা দলীয় মূলনীতিও। নির্বাচন অবশ্যই শিগগির ও দ্রুত সময়ের মধ্যে হতে হবে। তবে সেটা অবশ্যই মৌলিক কিছু সংস্কারের পর। সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের আয়োজন ত্রুটিপূর্ণ হবে। তবে নির্বাচন হতে হবে অবশ্যই কেয়ারটেকার সরকারের অধীনেই।
তবে স্থানীয় সরকার নাকি জাতীয় নির্বাচন? কোনটা আগে চায় জামায়াত? এমন প্রশ্নে এখনো কিছু চূড়ান্ত করা হয়নি বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ এ নেতা বলেন, নির্বাচনের তারিখ কবে হতে পারে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি, অবশ্যই যত শিগগির, দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন চাই। তবে অবশ্যই মৌলিক কিছু সংস্কার আগে দরকার। সেটা না করেই আগে নির্বাচন করতে গেলে তা আগের নির্বাচনের মতোই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নির্বাচন স্বচ্ছ করার জন্য জরুরি কিছু সংস্কার বা পরিবর্তন আগে দরকার। কিছু ইলেক্টোরাল ল পরিবর্তন করা দরকার। তাতে নির্বাচন কমিশন আরও বেশি শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি সংবিধানের কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা দরকার বলে আমরা জানিয়েছি।
মৌলিক পরিবর্তনে আমরা বলেছি যে, ‘যেমন দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী কেউ থাকতে পারবে না। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে।’
তাহের বলেন, যেসব সংস্কার কমিশন এরইমধ্যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, আমরা মনে করি, সেগুলো নিয়ে সরকারকে অনতিবিলম্বে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ডায়ালগ শুরু করা দরকার এবং এই ডায়ালগের মাধ্যমে সচেতনতা, স্বচ্ছতা তৈরি করে যথা শিগগির সম্ভব নির্বাচনের আয়োজন করা দরকার। অর্থাৎ নির্বাচন আয়োজন করার জন্য মিনিমাম, পসিবল, নেসেসারি রিফর্মসের পর নিকটবর্তী সময়ের মধ্যে আমরা নির্বাচন চাই।
সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের আয়োজন ত্রুটিপূর্ণ হবে বলে আমরা জানিয়েছি। আমরা এটাও বলেছি, সংস্কারের নামে অযথা সময়ক্ষেপণ করা সঠিক হবে না। জাতিসংঘ প্রতিনিধি দল আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলবেন।
জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের নেতৃত্বে অংশ নেন দলটির নির্বাহী পরিষদের সদস্য সাইফুল আলম খান, কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ।
জাতিসঙ্ঘ মিশনের পক্ষে ছিলেন মিসেস সারা পিট্রোপাওলি, রাজনৈতিক বিষয়ক কর্মকর্তা, জাতিসংঘের রাজনৈতিক ও শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক বিভাগ, নির্বাচনী সহায়তা বিভাগ, জনাব আদিত্য অধিকারী, রাজনৈতিক বিষয়ক কর্মকর্তা, এশিয়া প্যাসিফিক বিভাগ, জাতিসংঘের রাজনৈতিক ও শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক বিভাগ এবং শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগ, মিসেস নাজিয়া হাশেমি, উপদেষ্টা, ডিজিটাল যুগে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়া (ইউএনডিপি)।#
পার্সটুডে/এমএআর/২০