মার্কিন দার্শনিকের মন্তব্য
'ইমাম হোসেইন (আ)'র আরবাইনের মহিমা ইসলামোফোবিয়াকে পরাজিত করতে পারে'
বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সা)'র প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র এবং পবিত্র আহলে বাইতের অন্যতম সদস্য ইমাম হোসেইন (আ.) কে বিশ্বের ন্যায়বিচার অনুসন্ধানকারীদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে অভিহিত করেছেন মার্কিন দার্শনিক চার্লস তালিয়াফেরো।
আমেরিকার সেন্ট ওলাফ কলেজের দর্শনের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবং রয়্যাল ইনস্টিটিউট অফ ফিলোসফির সদস্য অধ্যাপক চার্লস তালিয়াফেরো নিপীড়ক ও অত্যাচারীদের মোকাবেলায় ইমাম হুসাইন (আ.)-এর অভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ইমাম হোসেইন (আ)'র আত্মত্যাগ বীরত্বপূর্ণ সাহসিকতার উদাহরণ এবং এটি যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মের লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য অনুপ্রেরণা দায়ক হিসেবে কাজ করছে।
পার্সটুডে-এর মতে অধ্যাপক তালিয়াফেরো আরো বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মহান বীর যেমন খ্রিস্টান নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা এবং হিন্দু নেতা মহাত্মা গান্ধী কারবালার যুদ্ধে ইমাম হোসাইন (আ.)-এর অসীম সাহসিকতার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
ইরানি বার্তা সংস্থা মেহেরের সঙ্গে একটি সাক্ষাত্কারে অধ্যাপক চার্লস তালিয়াফেরো ইমাম হোসেন (আ)'র চল্লিশা বা আরবাইনের শোক যাত্রায় খ্রিস্টানদের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, 'ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা যা কল্পনা করছে বিশ্বে তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ধার্মিক।'
রয়্যাল ইনস্টিটিউট অফ ফিলোসফির সদস্য ইয়েন আমেরিকান পিউ রিসার্চ সেন্টারের একটি গবেষণার ফলাফলের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন যে বিশ্বের ২৩০টি দেশের জনসংখ্যার ৮০ভাগ মানুষ ধর্মীয় বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। অনেক মুসলিম, খ্রিস্টান এবং হিন্দু ইমাম হোসেইন (আ)'র মহান আত্মত্যাগের প্রশংসা করেছেন এবং তাদের মধ্যে অনেকেই বিশ্বের অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই আলোচনায় অধ্যাপক চার্লস তালিয়াফেরো প্রত্যাশা করেন যে ইমাম হোসাইন (আ.)-কে জানার ফলে আরও বেশি মানুষ ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক জীবনের পথ সন্ধান করবে।
সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় এই অঞ্চল ও বিশ্বের জনগণের মধ্যে সহযোগিতা ও ঐক্য সৃষ্টিতে আরবাইনের শোকানুষ্ঠান কতটা কার্যকর- এমন প্রশ্নের জবাবে তালিয়াফেরো বলেন, আরবাইনের অনুষ্ঠান যত বেশি জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে, ততই ইসলামোফোবিয়া বা ইসলাম ভীতি মনোভাবকে পরাজিত করা যাবে।
প্রতি বছর বিশ্বের লাখ লাখ শিয়া মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা আরবাইনে ইমাম হোসেইন (আ) এর শাহাদাত বার্ষিকীর ৪০তম দিনের শোকানুষ্ঠানে যোগ দিতে ইরাকের কারবালায় গমন করেন। এটি বিশ্বের বৃহত্তম জনসমাবেশের একটি হিসাবে পরিচিত। সাধারণত আরবাইনের ২০ দিন আগে থেকেই সারা বিশ্বের জিয়ারতকারীরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবং ইরাক ও ইরানের আশেপাশের শহর থেকে তারা কারবালার দিকে ছুটে যান এবং সেখানে তারা কারবালার শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।#
পার্সটুডে/এমবিএ/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।