বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন: বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের এই খসড়াটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে জাতীয় সংসদের অধিবেশন না থাকায় রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হলে এটি আইনে পরিণত হবে।
এ প্রসংগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছন, বিদ্যমান আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন আছে। সেটিকে এখন মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন করা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে। অর্থাৎ কাল থেকে এটি আইনে পরিণত হবে।
এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ প্রসংগে বলেছেন, যেভাবে ধর্ষণ ও নারী-শিশু নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে যাচ্ছিল সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে মৃত্যুদন্ডের বিধান অপরাধীদের মাঝে ভীতির সৃষ্টি করবে।
তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনে শাস্তি বাড়ালেই অপরাধ কমবে তার নিশ্চয়তা নেই। তাছাড়া আইনের প্রয়োগ যদি যথাযথ না হয়, তদন্ত যদি সুষ্ঠ না হয়, মামলার ভিকটিম বা সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হয়-তা হলে তো ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা যাবেনা।

এ প্রসংগে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি ব্যারিষ্টার সাদিয়া আরমান রেডিও তেহরানকে বলেন, তার আশংকা এই শাস্তি বৃদ্ধির ফলে অপরাধী নিজেকে বাঁচাবার কৌশল হিসেবে ধর্ষণের পর ভিকটিমকে হত্যা করার প্রবণতা বাড়তে পারে। আর সেক্ষেত্রে শিশুরা অপেক্ষাকৃত অসহায় অবস্থার কারণের ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা বাড়তে পারে। এরকম হত্যার শিকার হবেন অধিক সংখ্যায়।
ব্যারিষ্টার সাদিয়া বিশ্বাস করেন, মৃত্যুদন্ড এখন বিশ্বব্যাপী একটি অমানবিক শাস্তি বলে বিবেচিত হচ্ছে। সেক্ষেত্রে এ আইনটি একটি সভ্য আইন বলা যাবে না।
সম্প্রতি একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় সারা দেশে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সৃষ্টি হয়। রাজপথের সোচ্চার দাবিসহ বিভিন্ন মহল থেকে ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের দাবি ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনটি সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড নির্ধারণ করেছে।#
পার্সটুডে/ আব্দুর রহমান খান/বাবুল আখতার/১২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।