পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১২ বছর: নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে নিহতদের স্মরণ
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i87896-পিলখানা_হত্যাকাণ্ডের_১২_বছর_নানা_কর্মসূচির_মধ্যদিয়ে_নিহতদের_স্মরণ
বাংলাদেশের রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদরদপ্তরে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের এক যুগ পূর্তিতে আজ (বৃহস্পতিবার) নানা কর্মসূচি ও গভীর শ্রদ্ধার মধ্যদিয়ে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণ করা হচ্ছে। ২০০৯ সালের এই দিনে হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ প্রাণ হারান মোট ৭৪ জন।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১ ১২:০৭ Asia/Dhaka
  • পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি বনানী সামরিক কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।
    পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি বনানী সামরিক কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।

বাংলাদেশের রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদরদপ্তরে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের এক যুগ পূর্তিতে আজ (বৃহস্পতিবার) নানা কর্মসূচি ও গভীর শ্রদ্ধার মধ্যদিয়ে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণ করা হচ্ছে। ২০০৯ সালের এই দিনে হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ প্রাণ হারান মোট ৭৪ জন।

আজ সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর বনানীর সামরিক কবরস্থানে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিনিধিরা নিহত সেনা কর্মকর্তাদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রেসিডেন্টের পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর প্রধান রিয়ার এডমিরাল এম আবু আশরাফ, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বনানীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্বজনরাও বনানীর সামরিক কবরস্থানে এসেছিলেন। তবে তারা গণমাধ্যমের সামনে কথা বলেননি।

দিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) কোরআন খানি, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। বিজিবির সব সেক্টর, প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটে বিজিবির পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে এবং বিজিবির সদস্যরা দিবসটি উপলক্ষে কালো ব্যাজ পরিধান করছেন।

২০০৯ সালে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সপ্তাহ চলাকালে ২৫ ফেব্রুয়ারি সশস্ত্র বিদ্রোহ করেন বাহিনীর কয়েকশ সদস্য। তাদের হাতে পিলখানা সদরদপ্তরে নিহত হন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন। পরে সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহীদের আলোচনা শেষে পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি অস্ত্র, গুলি ও গ্রেনেড জমাদানের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহের সমাপ্তি হয়। রক্তাক্ত সেই বিদ্রোহের পর সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকে। এ বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।

পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও বিদ্রোহের এ ঘটনায় মোট ৫৮টি মামলা দায়ের করা হয়। হত্যার এক মামলায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ৪২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এর মধ্যে বিএনপির প্রয়াত নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

অন্যদিকে বিদ্রোহের জন্য দায়ের করা ৫৭ মামলায় বিডিআরের মোট পাঁচ হাজার ৯২৬ জন সদস্যের বিভিন্ন মেয়াদে (চার মাস থেকে সাত বছর) কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি বহুল আলোচিত পিলখানা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। রায় প্রদানকারী তিন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার এ রায়টি প্রকাশ করা হয়। রায়ের দৈর্ঘ্য এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ রায়।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।